আ’লীগের ওপর জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে, প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা ব্যুরো: ক্ষমতায় থাকলে সাধারণত মানুষের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি বলেই মানুষের ভোট আমরা পেয়েছি। যতবার ক্ষমতায় এসেছি, মানুষের জন্য কাজ করেছি, তত মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ১৭ মে শুক্রবার গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এক নম্বর পলিটিক্যাল পার্টি। যে পার্টি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে। সেই আস্থা-বিশ্বাস আমরা দেখতে পারি এবারের নির্বাচনে, নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে যারা প্রথমবারের ভোটার তারা সবাই আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে তাদের আস্থা বিশ্বাস তারা জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারণটা হলো আমরা যে ক্ষমতায় থেকে মানুষের জন্য কাজ করেছি, মানুষের জন্য উন্নয়ন করেছি, মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য যে কাজগুলো করেছি সেটা মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছে। এটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতায় থেকেও মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি- এটাও কিন্তু বিশাল অর্জন।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জনগণের আস্থা-বিশ্বাস ধরে রাখার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নেতা-কর্মীদের কাছে এটুকু চাইবো– এ আস্থা-বিশ্বাস যেন আমরা ধরে রাখতে পারি। ব্যক্তিগত জীবনে কি পেলাম, না পেলাম সে চিন্তা করি না। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কতটুকু দিতে পারলাম সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।
একটি দলের সভানেত্রী হিসেবে ৩৮ বছর বোধহয় একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় আপনাদেরও সময় এসেছে, তাছাড়া বয়সও হয়েছে।…এ বিষয়গুলো তো দেখতে হবে।
১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে শেখ হাসিনা একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা সমস্বরে না, না বলে ওঠেন। তারা অভিব্যক্তি দিয়ে জানিয়ে দেন বঙ্গবন্ধু কন্যাকেই তারা সভানেত্রী হিসেবে দেখতে চান।
আওয়ামী লীগে ধ্বংস করতে বিভিন্ন সময়ের ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূল পরিবেশে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, যারা বারবার চেয়েছে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে, তারা সফল হয়নি। আওয়ামী লীগ কিন্তু আওয়ামী লীগের মতোই ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে।
৩৮ বছরে বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হোক, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হোক, এমন কোনো কাজ আমি বা আমার পরিবারের কোনো সদস্য কখনো করেনি। নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার জন্য কাজ করিনি, কাজ করেছি দেশের মানুষের জন্য। সব সময় চিন্তা করেছি মানুষকে কি দিতে পারলাম, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম।
দেশটাকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা ও প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সবাইকে সব সময় সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশটা যেন আবার স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী এদের হাতে যেন আর ক্ষমতা না যায়। কেউ যেন দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেদিকে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েক বছর বিদেশে নির্বাসিত থেকে ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। দেশে ফিরে আসার আগে বিদেশে থাকা অবস্থায় তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি টানা ৩৮ বছর বাংলাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠনের আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
৯৬ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এক টার্ম ও ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে টানা তিনবার মিলিয়ে বাংলাদেশে ইতিহাসে চার টার্ম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।