সোমবার ভোর ৫:১২, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

দিনাজপুর সাঁতাও ভিন্ন প্রেক্ষাপট প্রকাশ

বিভাগ বিনোদন, 7 May, 2023.

উম্মে কুলসুম মৌ,দিনাজপুরঃ একসময় দিনাজপুর জেলায় ২০ টি প্রেক্ষাগৃহ ছিল আর বর্তমানে একটিমাত্র মডার্ন সিনেমা হল নাজুক অবস্থায় চলমান রয়েছে।দিনাজপুরের সদর উপজেলার লিলি,মডার্ন,জুয়েল,চৌরঙ্গী,বোস্তান ও কুঠিবাড়ী নামের মোট ৬ টি সিনেমা হল একসময় রমরমিয়ে চলতো।

সর্বশেষ সিনেমা হলটিও অনিশ্চয়তায় পড়ে আছে। ২০০৩ সাল পর্যন্ত এসব সিনেমা হলে ব্যবসা মোটামুটি চললেও ধীরে ধীরে পরপর সবগুলো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায় মানুষ হল বিমুখ হওয়ার কারণে।

মানুষকে হলমুখী করার লক্ষ্যে জেলা শিল্পকলা একাডেমি দিনাজপুরে আয়োজন করা হয়েছিলো চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।গত ৫ মে শুক্রবার, ৬ মে শনিবার গণ অর্থায়িত চলচ্চিত্র সাঁতাও প্রদর্শিত হয়।এই সিনেমাটি রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত হয়েছে।সিনেমার উপজীব্য বিষয় হলো-সর্বনাশা তিস্তা পাড়ে বসবাসকারী মানুষের যাপিত জীবনের সুখ-দুঃখের ইতিবৃত্ত।এখানে সুনিপুণভাবে গ্রামীণ ঐতিহ্য নৌকাবাইচ,নদীর ঢেউয়ের কলতান,পিঠেপুলি উৎসব,রংপুরের লোকগীতি,কাঁথা সেলাই,প্রকৃতির বৈচিত্র্য,বন্যাকালীন পরিস্থিতি,নিম্নবিত্তের ঋণ,কিস্তি চালানো,ঢাকা শহরে রিকশা চালকের জীবন যাপন এবং গৃহপালিত গরু-বাছুরের সাথে জড়ানো কখনও বর্ণময় আবার কখনও বর্ণহীন চালচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।খন্দকার সুমন এই সিনেমাটি পরিচালনার পাশাপাশি গল্প,চিত্রনাট্য ও সংলাপও লিখেছেন নিজেই। গ্রামীণ সমাজের প্রান্তিক কৃষিনির্ভর মানুষের জীবন সংগ্রাম ও নারী চরিত্রের চিরায়ত লড়াইয়ের পটভূমি বাস্তবায়ন করা হয়েছে অনন্যভাবে।সাঁতাও শব্দের অর্থ উত্তরাঞ্চলের ভাষায় লাগাতার সাতদিন বৃষ্টি হলে তাকে সাঁতাও পানি বলা হয়।

দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমিতে এই দুইদিনই ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভীড়।সিনেমা দেখতে সঠিক সময়ে উপস্থিত হয় ছোট বড় পরিবারের সকলকে নিয়ে দর্শকরা এবং সিনেমা দেখার পর তাদের প্রতিক্রিয়াও ছিল চমৎকার।গ্রামীণ জীবনের সামাজিক প্রেক্ষাপটের উপলব্ধি দর্শক মনকে বিচলিত করেছে সহজেই।সিনেমাটি দেখার পর দর্শকরা জানায়,দিনাজপুরে একটিই মাত্র সিনেমা হল বর্তমানে রয়েছে কিন্তু সেখানেও নেই বসে সিনেমা দেখার পরিবেশ।কিছুক্ষণ বসে সিনেমা দেখার পর তারা বিরক্ত হয়ে উঠে যেতে বাধ্য হয়।এতে বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমিতে এরকম সুন্দর পরিবেশে সিনেমা দেখার আয়োজনে তারা ভীষণ আনন্দিত।অনেকদিন পর ভালো পরিবেশে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে সিনেমা দেখতে পেরে আত্মতৃপ্তি অনুভব করেছেন,সিনেমা হলের পরিবেশ মানসম্মত হলে নিশ্চয়ই আবারো হলমুখী হবে দর্শক।