পাকিস্তানের জয়, কঠিন সমীকরণে ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্ট: হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। এই নিয়ে টানা তৃতীয় জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে টেবিলের চার নম্বরে উঠে গেল সরফরাজরা। সেই সাথে সেমিফাইনালের পথটা কঠিন সমীকরণে পড়ে গেল বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার।
এই ম্যাচের পর রীতিমতো ঝড় বইয়ে গেল পয়েন্ট টেবিলে। প্রথমবারের মতো শীর্ষ চারে উঠলো পাকিস্তান, নেমে গেল ইংল্যান্ড। বাংলাদেশও এক ধাপ নেমে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। এতোদিন যেকোনো এক ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার একটা স্বপ্ন টিকে ছিলো। সেক্ষেত্রে দুই ম্যাচ হারতে হতো ইংল্যান্ডকে, তাহলে তারা থাকতো ৮ পয়েন্টে। বাংলাদেশ তার শেষ দুই প্রতিপক্ষ ভারত কিংবা পাকিস্তানের একজনকে হারিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে চলে যেত সেমিফাইনালে। পাকিস্তানের সঙ্গে রান রেটে মোকাবেলার সুযোগ ছিলো মাশরাফিদের। এখন ভারতের সঙ্গে হারলেও পাকিস্তানের সঙ্গে জিততেই হবে। কারণ পাকিস্তানের কাছে হারলে ১১ পয়েন্ট হয়ে যাবে দলটির। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও এতোদিন আশা করতে পারতো এক ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী পাকিস্তান তাদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে জিতলে ইংল্যান্ডকে জিততে হবে দুই ম্যাচেই। এতোদিন কাগজেকলমে হুমকি ছিলো এবার সেটা সিরিয়াসলিই ভর করলো ইংল্যান্ডের উপর। তার উপর সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। একই আশঙ্কা নিয়ে আরো বিপদে শ্রীলঙ্কা। তাদের শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালে যেতে সবগুলো ম্যাচ হারতে হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডকে।
২৯ জুন শনিবার ইংল্যান্ডের লিডসে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন গুলবাদিন নায়েব। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে মাঝপথে হোঁচট খেলেও ইমাদ ওয়াসিমের দৃঢ়তায় লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৩ উইকেট হাতে রেখেই। খেলতে হয়েছে ৪৯ ওভার ৪ বল। পাকিস্তানের পক্ষে শাহিন শাহ আফ্রিদি চারটি উইকেট তুলে নেন। ইমাদ ওয়াসিম বল হাতে দুই উইকেট ও দলের প্রয়োজনে চরম মূল্যবান ৪৯টি রান করেছেন।
প্রথমে ব্যাটে নেমে দলীয় ২৭ রানের মাথায় পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান গুলবাদিন নায়েব ও হাসমতউল্লাহ শাহিদিকে ফিরিয়ে আফগানদের চেপে ধরেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাকিস্তানের পক্ষে তৃতীয় আঘাত হানেন ইমাদ ওয়াসিম। বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টারত রহমত শাহকে ফিরিয়ে চাপ আরো বাড়ান ইমাদ। ৩ উইকেট হারিয়ে দলীয় স্কোর তখন ৫৭। এরপর আসগর আফগান ও ইকরাম আকিলহিল ৬৪ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত ৪২ রান করে সাদাব খানের বলে এলবিডব্লিউ হন আসগর আফগান। দলীয় স্কোরে ৪ চার যোগ হতে না হতেই আলিখিলও সাজঘরে ফিরলে আবারো চাপে পড়ে আফগানিস্তান। এ যাত্রায় হাল ধরেন মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লা জাদরান। দলীয় ১৬৭ রানে মোহাম্মদ নবী বিদায় নিলেও লড়াই চালিয়ে যান জাদরান। দলীয় ২০২ রানের মাথায় নাজিবুল্লা জাদরান সাজঘরে ফিরলে আরেক দফা ধাক্কা খায় আফগানরা। ইনিংস থামে ২২৭ রানে।
জবাবে একসময় হারের মুখেই পড়েছিলো পাকিস্তান। ১৫৬ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে একপ্রকার ম্যাচ থেকেই ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। সেই জায়গা থেকে দলকে জয় এনে দেন ইমাদ ওয়াসিম। খেলেন ৪৯ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। পাকিস্তানের পক্ষে মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবী দুটি করে উইকেট পেয়েছেন।