নবীনগরের ১ ও ২ টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, নবীনগর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দীর্ঘ দিন যাবৎ ১ ও ২ টাকা মূল্যের কয়েন ( ধাতব মুদ্রা ) অচলের পথে। তাই এখন নবীনগরে প্রায় দেখা মেলে না ১ ও ২ টাকা মূল্যের কয়েনের। এতে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। ভিক্ষুক ও এখন আর ১ ও ২ টাকা মূল্যের কয়েন নিচ্ছেন না। পার্শ^বর্তী মুরাদনগর, ব্ঞ্ছাারামপুর, কসবা ও রায়পুরা উপজেলায় ১ ও ২ টাকা মূল্যের কয়েন চললেও নবীনগরে অচলের পথে । গত ১৭ জানুয়ারী ২০১৫ সালে সচিবালয়ে ‘ভ্যাট সংশোধন আইন’ সংক্রান্ত বৈঠকে তৎকালিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগামীতে ৫ টাকা ছাড়া কোন মুদ্রা না রাখার চিন্তা ভাবনা করছে সরকার। নতুন ৫ টাকার মুদ্রা বাজারে ছাড়া হবে এবং তার আগে ৫ টাকা মানের মুদ্রার নীচে যে মুদ্রা আছে (১ ও ২ টাকা ) সেগুলো বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে। দৈনিক প্রথম আলোতে অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে গত ১৮ জানুয়ারী ২০১৫ প্রকাশিত নিউজের হেডলাইন ছিল ১ ও ২ টাকার কয়েন ও নোট থাকবে না- অর্থমন্ত্রী। দৈনিক প্রথম আলো সহ বাংলাদেেেশর অন্যান্য জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনে এই খবর দেখানো হয়েছিল। এই খবরটি নবীনগরে সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে ১ ও ২ টাকা কয়েন দিয়ে ক্রেতা বা বিক্রেতাদের কেউ লেনদেন করতে চায় না। ব্যাংক গুলোতে প্রথম দিকে ১ ও ২ টাকার কয়েন নিতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়। সেই থেকে ১ ও ২ টাকা কয়েন নিয়ে প্রায়ই ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে কথা কাটাকাটি থেকে ঝগড়া ও হয়েছে। এতে ভুগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের । অনেকে আবার নবীনগর থেকে ১ টাকা ও ২ টাকার কয়েন স্বল্প মূল্যে বা অর্ধেক দামে কিনে পাশ^বর্তী উপজেলায় গিয়ে লেনদেন করছেন। নৌকাঘাটস্থ ব্যবসায়ী মুসা মিয়া জানান, “অহন ১ টেহা ও ২ টেহার পুইসা চলে না, এতে কইরা কাস্টমারের লগে অনেক সময় কতা কাডা কাডি অয়”। নবীনগর বড় বাজারের মুদি দোকানি জানান, আগে ব্যাংকে ১ টেহা ও ২ টেহার পুইসা নিতো অহন নেনা যেই কারনে আমরাই নেই না।আবার কোন কোন ব্যাবসয়ী ১ টাকার চকলেট দিয়ে দেনা পরিশোধ করে। কাজী টুটুল নামে একজন ক্রেতা বলেন, এখন ৯/৪ টাকার দামের কোন কিছু কিনলে দোকানিরা ১০/৫ টাকা রেখে দেয়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দিন যাবৎ কয়েন সমস্যায় ভুগলেও প্রতিকার হচ্ছে না। দ্রুত নবীনগরের কয়েন সমস্যার সমাধানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন । নবীনগর বাজারের ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জনি জানান ব্যবসায়ীরা এখন ১ ও ২ টাকার কয়েন নিতে চায় না এবং আমি নিজেই ব্যাংকে গিয়ে ছিলাম আমাকে ব্যাংক থেকে বলেছে অল্প পরিমাণ কয়েন হলে নেওয়া যাবে বেশি নেওয়া যাবে না এ তথ্যের সঠিকতা যাচাই করতে এই প্রতিনিধি ২/৩ টি ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকগণ জানান আমাদের ব্যাংকে অল্প পরিসরে কয়েন হলে আমাদের নিতে কোন সমস্যা নেই, আমরা নিচ্ছি কিন্তু কেউ যদি ২-৩ হাজার টাকার কয়েন একসাথে নিয়ে আসেলে আমাদের সমস্যা হয়ে যায় ,বহন করতে কষ্ট হয় । এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমি বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছি এবং কয়েক মাস আগে আমি সব গুলো ব্যাংকে চিঠি দিয়ে অবগত করেছি যে কোন গ্রাহক যাতে ১ ও ২ টাকার কয়েন নিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। আবার ও তার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।