খাগড়াছড়ি স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার দায়ে স্ত্রী রাবেয়া আক্তারসহ (৩৫) ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ রেজা মো. আলমগীর হাসান এই রায় দেন। আসামি আবুল আসাদ ওরফে মিঠু পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে রাবেয়ার পরকীয়ার ঘটনায় সৌদি প্রবাসী স্বামী মোমিনুল হকের সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলছিল। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফিরে আসলে কলহ বেড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়া নিজ ভাইয়ের ছেলে সাইফুল ও বোনের ছেলে ফিরোজকে দিয়ে কৌশলে স্বামী মোমিনুল হককে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে ফিরোজ তার বন্ধু আবুল কালাম ও আবুল আসাদ ওরফে মিঠুকে দিয়ে সব খরচ মিলে ১ লাখ টাকার চুক্তিতে মোমিনুলকে হত্যার ছক করেন।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে পরিকল্পনা মাফিক খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রবীন্দ্রপাড়ায় নিয়ে মোমিনুলকে গলাকেটে ও কুপিয়ে করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনার একদিন পর গুইমারা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দেখিয়ে পুলিশবাদী মামলা হয়। এরপর পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের ১২জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৪ বছরের মাথায় এই রায় দেন।
দুপুর ১টা থেকে প্রায় ৩৫ মিনিটি ধরে রায়পড়ার একপর্যায়ে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, সংসারে স্ত্রী একজন বিশ্বস্থ সঙ্গী হওয়ার কথা। অথচ তার হাতে নিরাপরাধ প্রবাসী স্বামীকে প্রাণ দিতে হলো। আদালত অনেক ঘটনায় রায় দিলেও মাঝেমধ্যে সমাজের এমন কিছু ঘটনার রায় দেওয়ার বিষয়ে চিন্তায় ফেলে দেয়। তবে আমরা কেউ কেউ আইনের উর্ধ্বে নই। যদি এই ঘটনার সঠিক বিচার না হয় তাহলে সমাজ ব্যবস্থা সংকটে পরবে, নীতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এদিকে রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বিধান কানুনগো বলেন, এই রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তবে রায়ে অসন্তুষ্টি জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আরিফ উদ্দিন।